ওয়েবঃ কুইক গাইড (দ্বিতীয় পর্ব)

ওয়েবঃ কুইক গাইড (দ্বিতীয় পর্ব)

ওয়েব সার্ভারের রকমফের
প্রতিটা ওয়েবসাইট যে কম্পিউটারে প্রতিষ্ঠিত আছে তাকে ওয়েব সার্ভার বলে। এই সার্ভার সবসময় ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকে। ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত সকল ওয়েব সার্ভারের একটি স্বতন্ত্র এড্রেস থাকে, যা ০ থেকে শুরু করে ২৫৬ পর্যন্ত কোনও চার সংখ্যার সিরিজের মাধ্যমে প্রকাশিত আর যা পিরিয়ড দ্বারা পরস্পর থেকে পৃথক করা। যেমন, 68.178.157.132 অথবা 68.122.35.127।
যখন আমরা ওয়েব এড্রেস রেজিস্টার করি, যাকে ডোমেইন নামও বলা যায়, যেমন tutorialspoint.com, তখন আমাদের ওয়েব সার্ভারের আইপি এড্রেস নির্ধারণ করতে হয়, যা সাইটকে হোস্ট করবে। আমরা এমন ডেডিকেটেড সার্ভার লোড করতে পারি যা আমাদের ওয়েবভিত্তিক সব অপারেশনকে সমর্থন করবে।

মূলত চার ধরনের ওয়েব সার্ভার রয়েছে, এপাচি, আইআইএস, লাইটটিপিডি, আর জিগ’স’।এদের সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানব আমরা। এরা ছাড়াও বাজারে আরও কিছু সার্ভার বাজারে আছে, যেগুলো অনেক ব্যয়বহুল। এদের মধ্যে নেটস্কেপের আই প্ল্যানেট, বিয়া’র ওয়েব লজিক আর আইবিএমের ওয়েবস্ফিয়ার উল্লেখযোগ্য।

এপাচি এইচটিটিপি সার্ভারঃ
এটি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় জনপ্রিয় ওয়েব সার্ভার যাকে ডেভলাপ করেছে এপাচি সফটওয়ার ফাউন্ডেশন। এপাচি ওয়েব সার্ভার ওপেন সোর্স সফটওয়ার আর লিনাক্স, উইন্ডোজ, ইউনিক্স, ফ্রিবিএসডি, ম্যাক ওএস এক্স সহ প্রায় সকল অপারেটিং সিস্টেমে ইন্সটলযোগ্য। প্রায় ৬০ শতাংশ ওয়েব সার্ভার মেশিন এপাচি ওয়েব সার্ভার ব্যবহার করে থাকে।

জেএসপি ও জেটুইই সংশ্লিষ্ট সুবিধা পেতে আমরা টমক্যাট মডিউলের সাথে এপাচি ব্যবহার করতে পারি।
এই সার্ভার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখতে পারেন, Apache HTTP Server এখানে।

ইন্টারনেট ইনফরমেশন সার্ভিসেস বা আইআইএসঃ
ইন্টারনেট ইনফরমেশন সার্ভিসেস বা আইআইএস মাইক্রোসফটের একটি হাই পারফর্মেন্স ওয়েব সার্ভার। এটি উইন্ডোজের এনটি /২০০০, ২০০৩ প্লাটফর্মে চলে(সম্ভবত নবতর সংস্করণ গুলোতেও চলবে)। এটি উইন্ডোজের এনটি /২০০০, ২০০৩ এর সাথে বান্ডেল আকারে দেয়া হয়, যেহেতু আইআইএসকে অপারেটিং সিস্টেমের সাথে সমন্বিত করে তৈরি করা হয়েছে, এতে এটি পরিচালনা করা সহজ হয়।

এই সার্ভার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখতে পারেন, Miscrosoft IISএখানে।

লাইটটিপিডি, যাকে ‘লাইটলি’ উচ্চারন করা হয়, এটিও একটি ফ্রি ওয়েব সার্ভার, যাকে ফ্রিবিএসডির অপারেটিং সিস্টেমের সাথে প্রদান করা হয়। এই ওপেন সোর্স সার্ভার দ্রুত, নিরাপদ, আর অল্প পরিমানে সিপিইউএর শক্তি শোষণ করে। লাইটটিপিডি লিনাক্স, উইন্ডোজ, ম্যাক ওএস, সোলারিস ইত্যাদি অপারেটিং সিস্টেমেও কাজ করতে পারে।

এই সার্ভার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখতে পারেন, lighttpd এখানে।
সান জাভা সিস্টেম ওয়েব সার্ভারঃ সান মাইক্রোসিস্টেম প্রবর্তিত এই সার্ভার মধ্যম আর বড় ওয়েবসাইটের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এটি ফ্রি, কিন্তু ওপেন সোর্স নয়।এটি লিনাক্স, উইন্ডোজ আর ইউনিক্স প্লাটফর্মে চলে। সান জাভা সিস্টেম ওয়েব সার্ভার ওয়েব ২.০ এর জন্য উপযোগী বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজ, স্ক্রিপ্ট, টেকনোলজি যেমন জেএসপি, জাভা সারভলেট, পিএইচপি, পার্ল, পাইথন, রুবি অন রেইলস, এএসপি আর কোল্ডফিউসন ইত্যাদি সমর্থন করে।

এই সার্ভার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন এখান থেকে, Sun Java System Web Server।

Jigsaw Server
জিগ’স সার্ভারঃ জিগ’স যা ডবলু থ্রি সি’র সার্ভার, এসেছে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে। এটি ওপেন সোর্স, আর ফ্রি। লিনাক্স, উইন্ডোজ, ইউনিক্স, ফ্রিবিএসডি, ম্যাক ওএস এক্স ইত্যাদি বিভিন্ন প্লাটফর্মে কাজ করে। জিগ’স জাভায় লেখা, সিজিআই স্ক্রিপ্ট আর পিএইচপি প্রোগ্রামে চলে।

বিস্তারিত জানতে দেখুন, Jigsaw Server
ওয়েবসাইটের সুবিধাগুলোঃ
যদি এমন হয় যে আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করছেন, তাহলে আশা করা যায় যে আপনি এর সুবিধাগুলি সম্পর্কে জানেন। ওয়েব সাইট থাকার প্রধান যেসব সুবিধা সেগুলোর একটি তালিকা নিচে দেয়া হল,
ব্যবসা সারাক্ষণই খোলাঃ নিজের ব্যবসার অনলাইন অপশন খুলতে পারলে তা বছরের ৩৬৫ দিন, সপ্তাহের ৭ দিন দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই চালু একটি ব্যবসা হিসেবে থাকবে। এমনকি আপনি যদি পৃথিবীর অন্য প্রান্তেও থাকেন, সপ্তাহের ৭ দিনই আপনার গ্রাহকদের সেবা দিয়ে যেতে পারবেন।

বেশি ক্রেতা প্রাপ্তিঃ যেহেতু সাড়া পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে আপনার সাইটটি মানুষ দেখতে পাচ্ছে, তাই আপনি অন্য প্রদেশ এমনকি অন্য দেশ থেকেও গ্রাহক পেতে পারেন একই রকম শ্রম আর অর্থ ব্যয় করে।
ব্যপক পরিমান অর্থের সাশ্রয়

অনলাইনে ব্যবসা থাকার সবচেয়ে বড় সুবিধাগুলোর একটি হল এটি। অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য বিশাল লোকবল বা প্রচুর রিসোর্স থাকার কোনও প্রয়োজন নেই। অনলাইনে ব্যবসা চালানোর এমন আরও অনেক আর্থিক সুবিধা আছে। ভেবে দেখুন কতগুলো মানুষকে চিঠি পাঠাতে হত আপনার বিক্রির অবস্থা তাদের জানাতে, যদি না আপনি আপনার সাইটে সেই তথ্য তুলে ধরে অপেক্ষা করতেন কেবল ক্রেতাদের সেটি ভিজিট করার জন্য।

বিজ্ঞাপনের সুযোগঃ নিজেদের বিজ্ঞাপনের খরচ বাঁচানো ছাড়াও অন্য কোম্পানির বিজ্ঞাপন সাইটে দেখিয়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগও থাকছে। আপনি যদি কখনো লোকাল পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন তাহলে জানবেন এর খরচ কেমন। প্রতিটা লাইন, প্রতিটা ইঞ্চি এমনকি প্রতিটা রংএর জন্য আলাদাভাবে টাকা খরচ করতে হবে আপনাকে। আর ওয়েবে কতটা বিজ্ঞাপন আপনি দিচ্ছেন তার কোনও সীমা পরিসীমা নেই। তাই যখনই আপনি নতুন কোনও পণ্য বাজারে আনবেন, বিজ্ঞাপনের জন্য আপনার ভাল অপশন হাতে থাকছে।
একটা ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করে

ইন্টারনেট একটি চমৎকার মাধ্যম যেখানে আপনি আপনার নিজের একটি পছন্দের ইমেজ তৈরি করতে পারেন। এটি আপনারই হাতে। যেমন ধরুন, আপনি আপনার একটি প্রফেশনাল ওয়েবসাইট ডিজাইন করলেন, দরকারি কন্টেন্ট সংযুক্ত করলেন, আর আপনার কোম্পানি একটি নির্ভরযোগ্য অবস্থান পেয়ে গেল। আপনার ব্যবসা কতটা বড় তা ব্যাপার না, উপযুক্ত টুল আর প্রকৃত ইচ্ছা থাকলে ওয়েবে আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানকে এমনকি একটা কর্পোরেশনের মত বৃহৎ আকারে সাজাতে পারেন।

গ্রাহকের সন্তুষ্টিঃ যদি আপনার অনলাইনে একটি ভাল সাইট থাকে, কাস্টমার কেয়ারের আদলে আপনি আপনার গ্রাহকদের পরিপূর্ণ সেবা দিতে পারবেন। যেমন, অনলাইন হেল্প, ফ্রিকোয়েন্টলি আস্ক কোশ্চেন, আর অন্যান্য দরকারি তথ্য অনলাইনে রাখতে পারেন। মুক্ত আলোচনার জন্য ফোরাম, গ্রাহকের সন্তুষ্টি যাচাইয়ের জন্য জরীপ ইত্যাদিরও ব্যবস্থা রাখতে পারেন আপনি আপনার সাইটে।

আপনার কাজের প্রদর্শনীঃ আপনি যদি রিয়েল এস্টেট এজেন্ট, কনস্ট্রাকশন বিজনেসের মালিক বা বিউটি সেলনের বিশেষজ্ঞ হন,বা এরকম কোনও কাজের সাথে জড়িত থাকেন তাহলে আপনার কাজকে আপনার সাইটে তুলে ধরতে পারেন আপনি। যদি কোনও সম্ভাব্য গ্রাহক আপনার পূর্ববর্তী কাজের কোনও উদাহরণ বা স্যাম্পল দেখতে চান, তাকে আপনার সাইট দেখিয়ে দিতে পারেন সেই উদাহরণ হিসেবে। ছবি পাঠানো বা ক্লায়েন্টকে পূর্ববর্তী কাজ করা বিল্ডিঙের কাছে নিয়ে যাওয়ার চেয়ে এটি অনেক ভাল, তাই না?

.
ওয়েব- যেসব দক্ষতা দরকার

আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে চান, তাহলে আপনার কিছু দক্ষতার প্রয়োজন পড়বে। আর এই দক্ষতা বা স্কিলসেট আসলে বর্তমান সময়ে সীমাহীন, কারণ প্রচুর প্রযুক্তি আছে যা আমাদের সাইটের জন্য দরকার হতে পারে, আর এমন অনেক প্রযুক্তি নিয়তই আসছে। তাই আমাদের পরিকল্পনা করে একটি প্রযুক্তি নির্বাচনে নিশ্চিত হয়ে প্রকল্প নিয়ে আগাতে হবে।

লিপিবদ্ধ সকল দক্ষতাই যে একজনের থাকতে হবে এমন না, আপনি যদি সরল ধরনের কোনও সাইট তৈরি করতে চান তাহলে প্রথমে উল্লেখ করা ৪টি দক্ষতা থাকলেই মোটামুটি শুরু করতে পারবেন। আরও বড় ও ইন্টারেক্টিভ সাইট তৈরির ক্ষেত্রে অবশিষ্ট দক্ষতাগুলো প্রয়োজন পড়তে পারে।

• কম্পিউটার অপারেশনঃ যা আপনাকে জানতে হবে তা হল কোনও কম্পিউটার চালানোর নিয়মকানুন। উইন্ডোজ, লিনাক্স বা ম্যাকিনটোশ। এটি নির্ভর করবে কোন ধরনের ওয়েব সার্ভারে আপনি আপনার ওয়েবসাইট হোস্ট করাতে চান। তাই আপনাকে কেবল ওই সিস্টেম সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ধারণা থাকতে হবে। বেসিক অপারেশন যথা ফাইল তৈরি, ডিলিট, আপডেট করা, ডিরেক্টরি তৈরি, ফাইলের পারমিশন ইত্যাদি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
• রিমোট এক্সেসঃ বেশিরভাগ সময় কেবল রিমোট সাইট থেকে আপনার সাইটে প্রবেশ করা যাবে। তাই আপনাকে ভালমত জানতে হবে কীভাবে রিমোট সাইট থেকে কম্পিউটারে সংযুক্ত থাকা যাবে। অন্ততপক্ষে রিমোট মেশিনে সংযুক্ত থাকার জন্য টেলনেট ইউটিলিটি সম্পর্কে বেসিক নলেজ থাকতেই হবে। আপনার ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক সার্ভিস প্রভাইডারই কন্ট্রোল প্যানেল সুবিধা দিয়ে থাকে।
• ফাইল আপলোড ও ডাউনলোডঃ আগেই বলেছি, আপনার ওয়েবসার্ভারটি থাকবে রিমোট সাইটে। তাই আপনার ওয়েবসাইট সংশ্লিষ্ট সব ফাইল আপলোড বা ডাউনলোড করার দক্ষতা থাকতে হবে। রিমোট মেশিনে সংযুক্ত থেকে ফাইল আপলোড বা ডাউনলোড করার জন্য অন্তত এফটিপি ইউটিলিটি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। অনেক সার্ভিস প্রভাইডারই সার্ভারে ফাইল আপলোডের সুযোগ দিয়ে থাকেন।
• এইচটিএমএল বা এক্স এইচটিএমএলের দক্ষতাঃ এগুলো মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়েজ যা আপনার সাইট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এগুলোতে দক্ষতা থাকতে হবে। আরও জানতে পারেন এখানে, HTML / XHTML।
• .সিএসএসের নলেজঃ এইচটিএমএল বা এক্স এইচটিএমএলের মাধ্যমে করা যায়না এমন কিছু কাজ করতে হয় সিএসএসের মাধ্যমে। সেজন্য এবিষয়েও কিছু তথ্য জানা থাকা দরকার।
• পিএইচপি স্ক্রিপ্টঃ বর্তমানে অনেক সাইট তৈরি হচ্ছে এই ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে। ইন্টারাকটিভ ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে এটি সাহায্য করবে। এখান থেকে এবিষয়ে আরও জানতে পারবেন, PHP Script।
• পার্ল স্ক্রিপ্টঃ ইন্টারাকটিভ ওয়েব এপ্লিকেশন তৈরির জন্য এটি ব্যবহার করা যায়। এই ল্যাঙ্গুয়েজে সাইট তৈরি করতে চাইলে দেখতে পারেন এখানে, PERL Script।
• জাভা অথবা ভিবি স্ক্রিপ্টঃ ইউজার লেভেল ভ্যালিডেশন আর আরও বেশি ইন্টারাকটিভিটির জন্য এই স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করা যায়। তাই কোনও একটি ক্লায়েন্ট সাইড স্ক্রিপ্টিং জানা থাকা দরকার।
• এজাক্স প্রযুক্তিঃ এটি ওয়েবের সর্বশেষ ঘরানার প্রযুক্তি। গুগল আর ইয়াহু তাদের ব্যবহারকারীদের ভাল সুবিধা দেয়ার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। এবিষয়ে জানার জন্য দেখতে পারেন এখানে, AJAX Technology।
• এএসপি বা জেএসপিঃ এটিও ইন্টারাকটিভ ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে।
• ফ্ল্যাশের জ্ঞানঃ ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ম্যাক্রোমিডিয়া ফ্ল্যাশও ব্যবহার করতে পারেন। এটি শিখতে শুরুতে একটু সময় লাগতে পারে কিন্তু একবার শিখে গেলে এটি দিয়ে অনেক সুন্দর দৃষ্টিনন্দন সাইট তৈরি করা সম্ভব।
• এইচটিটিপি প্রটোকলঃ যত সামনে এগুচ্ছেন আপনি তত জানতে পারছেন ওয়েব সম্পর্কে। তাই আমার মনে হয় আপনার এর মূল ভিত্তিগুলো যেমন এইচটিটিপি প্রটোকল সম্পর্কে জেনে নেয়া ভাল। এখান থেকে আপনি অনেক তথ্য পেতে পারেন, HTTP Protocol।
ওয়েবঃ যেসব টুল লাগবে

একটি মৌলিক বিষয় হিসেবে, আপনার একটি ভাল ইন্টারনেট কানেকশন লাগবে যা আপনি পাবেন নির্ভরযোগ্য সার্ভিস প্রভাইডারের থেকে, ভাল গতি আর নিরবচ্ছিন্নতা থাকতে হবে সেই লাইনে। এক্ষেত্রে একটু যাচাই বাছাই করে নেবেন। যে টুল আর অবকাঠামো আপনাকে ওয়েবসাইট তৈরিতে সাহায্য করবে সেগুলো হল,

কম্পিউটারঃ যদি আপনার কম্পিউটার থেকে না থাকে অর্থাৎ আপনি যদি এই টিউটোরিয়ালটি প্রিন্টেড আকারে পড়ছেন এমন হয়, তবে আমার পরামর্শ হল আপনার একটি কম্পিউটার লাগবেই, যেটিতে উইন্ডোজ, লিনাক্স, ইউনিক্স বা ম্যাকিনটোশ অপারেটিং সিস্টেম চালু আছে।
ইন্টারনেট কানেকশনঃ যদি আপনার ইন্টারনেট কানেকশন না থেকে থাকে তাহলে পরবর্তী কাজ হল ইন্টারনেট নেয়া। আপনার রিকয়ারমেন্ট ও বাজেটের উপর নির্ভর করে এটি হতে পারে ডায়াল আপ অথবা দ্রুতগতির ব্রড ব্যান্ড কানেকশন।
একটি ওয়েব সার্ভারঃ আপনার ওয়েবসাইট সংক্রান্ত সব ফাইল রাখার জন্য এরপর আপনার দরকার হবে ওয়েব সার্ভার। আপনাকে সার্ভারে জায়গা কিনতে হতে পারে। লক্ষ লক্ষ আইএসপি আছে যারা ওয়েব স্পেস বিক্রি করে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে। আরও জানতে এখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন, Web Hosting Concepts।

টেক্সট এডিটরঃ ওয়েবসাইট ডেভলাপ করার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল টেক্সট এডিটর, যদি উইন্ডোজ ব্যবহার করেন তাহলে নোটপ্যাড আর লিনাক্স বা ইউনিক্স ব্যবহার করলে vi editor ব্যবহার করতে পারেন।এইচটিএমএল, পিএইচপি বা এএসপি পেজ লিখতে বা অন্য কোনও কিছু এডিট করতে এই টেক্সট এডিটর কাজে লাগবে। প্র্যাকটিসের জন্য Online HTML Editor ব্যবহার করতে পারেন।
একটি ওয়েব ব্রাউজারঃ আপনার এইচটিএমএল ফাইলের ফলাফল দেখার জন্য এটি লাগবে। তাই আপনার কম্পিউটারে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার অথবা ফায়ারফক্স এরকম কোনও একটি ব্রাউজার ইন্সটল করা থাকতে হবে।

ওয়েব অথরাইজিং টুলঃ এইচটিএমএল ফাইলের জন্য সরল টেক্সট এডিটর ব্যবহার করতে না চাইলে অনেক ওয়েব অথরাইজিং টুল অর্থাৎ এইচটিএমএল এডিটর কিনতেও পাওয়া যায়, যেমন মাইক্রোসফটের ফ্রন্টপেজ আর ম্যাক্রোমিডিয়া ড্রিমওয়েভার ইত্যাদি, এগুলো ভিজুয়াল এইচটিএমএল ও এইচটিএমএল সোর্স কোড এডিটর হিসেবে কাজ করতে পারে। এই এডিটরগুলো এইচটিএমএল পেজ তৈরি করতে অনেক সাহায্য করে।

নিরাপদ টেলনেট ক্লায়েন্টঃ আপনি যদি ওয়েব সার্ভারে সরাসরি সংযুক্ত হতে চান তাহলে PuTTY নামের এই টুলটি ব্যবহার করতে পারেন।
নিরাপদ এফটিপি ক্লায়েন্টঃ আপনি যদি ওয়েব সার্ভারে সরাসরি সংযুক্ত অবস্থায় এফটিপি ক্লায়েন্ট ব্যবহার করে ফাইল আপলোড বা ডাউনলোড করতে চান তাহলে PSFTP টুলটি ব্যবহার করতে পারেন। এফটিপি মানে হল ফাইল ট্রান্সফার প্রটোকল, আপনার সাইট ডিজাইনের পর এটিকে ওয়েবে পাঠাতে হবে, আপনার জন্য এই কাজটি করে দেবে এফটিপি।

ওয়েবঃ ডোমেইন নামঃ ডোমেইন নেম আপনার ইন্টারনেট এড্রেসের অংশ। আর থ্রিডবলু এর পরে আসে। যেমন, Tutorialspoint.com এ ডোমেইন নেম হল tutorialspoint.com । ডোমেইন নেম আপনার বাণিজ্যিক পরিচয় হতে পারে তাই এটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়া উচিৎ। মনে রাখা বা টাইপ করার ক্ষেত্রে সহজ হয় এমন নাম নির্বাচন করা উচিৎ।

ডোমেইন নেম কীভাবে পাবঃ সাইট অনলাইনে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল ডোমেইন নেম কেনা। আপনার পছন্দের নাম না পেলে ভাল অন্য কোনও নামও চলবে। যখন আপনি ডোমেইন নেম কিনলেন তখন তা রেজিস্টার্ড হয়ে গেল, আর বিশাল ডোমেইন নেম রেজিস্টারে উঠে গেলো। আর আপনার আইপি এড্রেস, যা একটি ডিএনএস সার্ভারে স্টোর করা, এবং আপনার যোগাযোগ তথ্য, ওয়েবসাইটের তথ্য ইত্যাদিও সেখানে সংরক্ষণ করা হবে।

আপনি GoDaddy বা এরকম কোথাও থেকে ডোমেইন নেম কিনতে পারেন।

ডোমেইন এক্সটেনশনের টাইপঃ আপনার ডোমেইন নামের জন্য আপনি ডোমেইন এক্সটেনশনের যেকোনো টাইপ বেঁছে নিতে পারেন। এটি মূলত আপনার ব্যবসার ধরনের উপর নির্ভর করে।

যেমন পড়ালেখা সংশ্লিষ্ট সাইটের জন্য .edu এক্সটেনশন নির্বাচন করতে পারেন।

নিচে কিছু এক্সটেনশনের উদাহরণ দেয়া হল তাদের উপযোগিতা সহ, যদিও কোনও কঠোর নিয়ম নেই এক্ষেত্রে, সর্বাধিক ব্যবহৃত এক্সটেনশন হল ডট কম।
• .com − কোম্পানি বা কমার্শিয়াল সাইট বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, তবে যেকোনো সাইটেই ব্যবহৃত হতে পারে।
• .net − নেটওয়ার্ক বোঝায়, সাধারণত নেটওয়ার্ক সাইট নির্দেশ করে।
• .org − অর্গানাইজেশন নির্দেশ করে, আর সাধারণত নন প্রফিট সংস্থা হিসেবে নির্দেশ করে
• .us, .in − দেশের নামের উপর ভিত্তি করে এদের নির্দেশ করা হয়, দেশভিত্তিক অবস্থান নির্দেশ করে।
• .biz − নতুন ধরনের এক্সটেনশন, পুরোপুরি ব্যবসায়িক বিষয় নির্দেশ করে।
• .info − তথ্য সংক্রান্ত বিষয় বোঝায়, নতুন হিসেবে ভাল সফলতা পাচ্ছে।
• .tv − টেলিভিশনের সাথে সংশ্লিষ্ট এক্সটেনশন, টিভি চ্যানেলের ক্ষেত্রে বেশি উপযোগী।

নতুন ডোমেইন এক্সটেনশন যেমন .biz .info আর .us ইত্যাদির ক্ষেত্রে কিছু বেশি চয়েস করা সম্ভব কারণ অনেক জনপ্রিয় নাম নির্বাচিত হতে বাকি রয়ে গেছে। দামের ক্ষেত্রেও এখনও কিছু সুবিধা গ্রাহকরা পেতে পারেন।

ডোমেইন নেম নির্বাচন করাঃ
ডোমেইন নেম আপনার বাণিজ্যের ঠিকানা। তাই এটি নির্বাচন করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অনেকে ডোমেইনে কীওয়ার্ড নিয়ে চিন্তা করেন। কিন্তু এটি ডোমেইন নেম ছোট, মনে রাখার মত আর হাইফেনমুক্ত রাখার পাশাপাশিও করা যায়।

ডোমেইনে কীওয়ার্ড ব্যবহার প্রতিযোগিতার বাজারে ভাল সুবিধা দিতে পারে। এটি সার্চ ইঞ্জিনে ভাল অবস্থান তৈরি করে ভিজিটর বৃদ্ধিসহ গ্রাহকের জন্য লিঙ্ক পাওয়ার সুবিধা তৈরি করে ব্যবসার সফলতার ক্ষেত্রও তৈরি করতে পারে।

লম্বা আর কনফিউজিং ডোমেইন নেম কেনা থেকে বিরত থাকুন। অনেকে ড্যাশ আর হাইফেন ব্যবহার করে তাদের ডোমেইন নেম লিখতে পারে, আগে ডোমেইন নেম নিজে গুরুত্বপূর্ণ রেঙ্কিং ফ্যাক্টর ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেটি আর এমন নেই।

আপনার ডোমেইন নেমে দুই বা তিনটি ওয়ার্ড রাখুন, এটি লোকের মনে রাখার জন্য ভাল হবে।যেমন ধরুন eBay, Yahoo!, Expedia, Slashdot, Fark, Wikipedia, Google ইত্যাদি।

মানুষ যেন নাম শুনে আপনার সাইটের নাম বানান করতে পারে, আর আপনি কী বিক্রি করবেন তাও যেন বুঝতে পারে। এক্ষেত্রে কীওয়ার্ড কাজে লাগলে ভাল, না লাগলে কীওয়ার্ডের আইডিয়া বাদ দিতে পারেন।

সাবডোমেইন কীঃ
আপনার প্রয়োজন অনুসারে আপনার ডোমেইনকে আপনি অনেক সাবডোমেইনে বিভক্ত করতে পারেন।আপনার একাধিক ব্যবসা থেকে থাকলে আপনি একই ডোমেইনে বিভিন্ন সাবডোমেইন দ্বারা সেই ব্যবসাগুলো চালাতে পারেন। নিচে উদাহরণের মাধ্যমে জিনিসটি পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হল,
গুগলের ডোমেইন আমরা সবাই দেখেছি, গুগল তাদের ব্যবসার উপর ভিত্তি করে অনেকগুলো সাব ডোমেইন চালু রেখেছে, তাদের কয়েকটি নিচে দেখালাম,
• adwords.google.com − এই সাব ডোমেইন গুগলের এড ওয়ার্ডের জন্য
• groups.google.com − এই সাব ডোমেইন গুগলের গ্রুপের জন্য,
• images.google.com − এই সাব ডোমেইন গুগলের ইমেজের জন্য ব্যবহৃত হয়।

এভাবে আপনি আপনার ব্যবসার জন্য সাবডোমেইন ব্যবহার করে সুন্দরভাবে সাইট চালাতে পারবেন। আপনার যদি অলরেডি সাইটের ডোমেইন নেম থেকে থাকে তাহলে আপনার সার্ভিস প্রভাইডার আপনার সাবডোমেইনের ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন।

ওয়েব- সাইটের গঠনঃ
এখন আপনি একটি সাইটের গঠনের জন্য প্রস্তুত। আর কিছু করার আগে আপনাকে কিছু বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে। প্রতিটা ডিটেইল সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বলা সম্ভব নয় তবে মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে কিছু আলোকপাত করছি আমরা এখানে।

ওয়েবসাইটে কি কি রাখবেনঃ এর মূল বিষয়টি নির্ভর করবে আপনার ব্যবসার ধরণ আর সাইটের ধরনের উপরে। যে পেজগুলো মোটামুটি থাকতেই হয় সেগুলো হল
• আকর্ষণীয় হোমপেজঃ সব সাইটে এটি থাকতেই হবে।
• পরিপূর্ণ বর্ণনাসহ পণ্য বা সেবার তালিকা
• মূল্য সংক্রান্ত বিস্তারিত বর্ণনা
• আপনার অর্জনসহ কোম্পানি ও ব্যবসার প্রকার সম্পর্কে তথ্য
• স্টাফ সম্পর্কে তথ্য, সম্ভব হলে তাদের অভিজ্ঞতা
• আপনার সাথে যোগাযোগের বিস্তারিত তথ্য
• ফ্রিকোয়েন্টলি আস্ক কোশ্চেন
• সাকসেস স্টোরি আর গ্রাহকের ফিডব্যাক

আপনার গ্রাহকদের জন্য আপনার সাইটকে আকর্ষণীয় ও উপকারি করে গড়ে তুলুন। সাইটের ভিজিটররাই আপনার গ্রাহক হবে, তাই গ্রাহক সেবাই আপনার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ।

ওয়েবসাইট কিভাবে ডিজাইন করবেনঃ
এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে, নাহলে অনর্থক কষ্টই করা হবে, কাজের কাজ কিছু হবে না। কাগজে বা ইলেকট্রনিক ডকুমেন্টে আপনার প্ল্যান আর ডিজাইন সম্পর্কে খসড়া করুন। এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে তা হল,
• কোন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবেন তা ঠিক করুন। নমনীয়তা আর দ্রুত ডেভলাপমেন্টের সুযোগ কিসে তা বোঝার চেষ্টা করুন। সেই অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নিন।

• ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী কাজ করুন যাতে পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে অল্প চেষ্টায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা যায়।
• প্রয়োজনীয় পারফরমেন্স মাথায় রেখে ডিজাইন করুন। ডাটাবেস ভিত্তিক সাইট তৈরি করতে চাইলে ডাটাবেসের উপর ভাল দখল নিয়ে তারপর সাইটটি তৈরি করতে হবে।

• যথাসম্ভব সরল রাখুন আপনার সাইটকে, যেন নতুন কোনও ডেভলপার আপনার ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে পারে প্রয়োজন হলে।
• সাইটের পুনরাবৃত্তিমূলক উপাদান সনাক্ত করে তাদের আলাদা করে রাখুন, যাতে প্রয়োজনে সহজে ব্যবহার করা যায়।
• আপনার ভিজিটরদের প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করুন, আর সেই অনুযায়ী তাদের রুচি অনুসারে সাইট সাজাতে পারলে ভাল হবে।
• সাইট ভিজিটরের দৃষ্টিতে আপনার সাইটটিকে দেখার চেষ্টা করুন। আপনি ভিজিটর হলে কীভাবে কি খুজতেন এখানে? এমন সাইটের মত কোন সাইট আপনি হলে কি ভিজিট করতেন?
• আপনাকে এমন সাইট বানাতে হবে যা সার্চ ইঞ্জিন বান্ধব।
আবারো বলছি, আপনার সাইটের উপস্থাপনা সুন্দর হতে হবে। নাহলে, অসংখ্য সাইট আছে প্রায় একই বিষয়ের উপরে, তাই ভিজিটরকে ১ মিনিটের বেশি সময় আটকে রাখা অনেক কঠিন হবে আপনার জন্য।

ওয়েবসাইট ইন্টারেক্টিভ করবেন কী করে?
ইন্টারেক্টিভ সাইট যা দীর্ঘ সময় ধরে ভিজিটরদের চাহিদা মেটায়, সেগুলোর ভিজিটররা গ্রাহক হিসেবে আপনার জন্য অধিক মুনাফার কারণ হবে। তাই ইন্টারেক্টিভ সাইট গুরুত্বপূর্ণ।

কোনও প্রোগ্রামিং স্কিল বা অর্থ ব্যয় না করে সাইট ইন্টারেক্টিভ করা যায় নিচের টুলগুলো ব্যবহার করে,
• পোল
• ফোরাম
• গেস্ট বুক
• চ্যাট রুম
• গ্রিটিং কার্ড
• টেল এ ফ্রেন্ড অপশন
• ফিডব্যাক ফর্ম
• লাইভ কাস্টমার সার্ভিস
• ডেইলি জোক বা ডেইলি কার্টুন
• দৈনিক সংবাদের শিরোনাম,
• সাইট সার্চ ইঞ্জিন
• মেইলিং লিস্ট
• স্বয়ংক্রিয় ফ্রিকোয়েন্টলি আস্ক কোশ্চেন

এই তালিকা লম্বা হতেই থাকবে, আপনার টার্গেট ভিজিটরদের উপর ভিত্তি করে।
আপনার সাইটে কীভাবে কোডিং করবেনঃ
যখন আপনি আপনার সাইট কোডিং করবেন, তখন ভাল সাইটের জন্য আপনার নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা থাকতে হবে,
• আপনার সাইটের ডবলুথ্রিসি এর সকল মানদণ্ড সম্পন্ন করা থাকতে হবে। বর্তমানে সাইট ডেভলাপে এক্সএইচটিএমএল ব্যবহার করা হয়। এটি এইচটিএমএলএর পরিশোধিত রূপ।

• ডবলুথ্রিসি ভ্যালিডেটর দ্বারা আপনার সোর্স কোডভ্যালিডেট করিয়ে নিতে হবে।
• এইচটিএমএল ফাইলের ভেতরে প্রাসঙ্গিক কমেন্ট লিখুন কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত কমেন্ট এড়িয়ে চলুন।
• আপনার স্টাইলশিট, জাভা আর ভিবি স্ক্রিপ্ট আলাদা ফাইলে রাখুন আর প্রয়োজনে ব্যবহার করুন।
• ওয়েব পেজে খুব বেশি গ্রাফিক্স ব্যবহার করবেন না।
• আপনার ওয়েবপেজগুলোকে ডাইন্যামিক্যালি জেনারেট না করিয়ে স্ট্যাটিক রাখার চেষ্টা করুন। .
• পেজে যাতে কোনও ব্রোকেন লিঙ্ক না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
• আপনার ওয়েব পেজগুলো বড় বড় ব্রাউজারে টেস্ট করান ভালভাবে কাজ করছে কিনা।
• সম্ভাব্য সব অবস্থার জন্য স্ক্রিপ্টগুলো টেস্ট করান। টেস্ট না করিয়ে পেজ হোস্ট করাবেন না।

সার্চইঞ্জিন বান্ধব সাইট কীভাবে বানাবেন?
সার্চইঞ্জিন বান্ধব সাইট বানানোটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, নাহলে আপনার যেসব কাস্টোমার গুগল বা ইয়াহু ব্যবহার করে আপনাকে খুজছে, তারা আপনাকে খুঁজেও পাবে না।
এটি এতো গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা Search Engine Optimization টিউটোরিয়ালের ব্যবস্থা রেখেছি আর দৃঢ়ভাবে আপনাকে বলছি, সাইট ডেভলাপের আগে এই বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের অবশ্যই জেনে নেয়া উচিৎ।

সোর্স কোড নিরাপদে রাখাঃ
সাইট ডেভলাপের সময় সম্পূর্ণ সোর্স কোড আলাদা ফাইলে সংরক্ষণ করা উচিৎ যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনও ফাইল ডিলিট হলে সেগুলো আবার ফিরে পাওয়া যায়। দৈনিক বা ঘণ্টা ভিত্তিতে ব্যাকআপ রাখার চর্চা করা তাই খুব উপকারি অভ্যাস হতে পারে।অন্য কোনও মেশিন বা মিডিয়ায় এটি সংরক্ষণ করতে হবে।
ওয়েবঃ হোস্টিংএর কনসেপ্ট
ওয়েব হোস্টিং মূলত আপনার সাইটের কন্টেন্টকে ওয়েব সার্ভারে রাখা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে। আপনার সাইট আপনার নিজের সার্ভারে রাখা একটি অপশন হতে পারে। কিন্তু এটা সাধারণত অনেক ব্যয়বহুল হতে পারে। তাই সেটা নিয়ে আমরা এখানে আপাতত আলোচনা করছি না।
সার্ভার স্পেস কেনা বা কোনও আইএসপির থেকে কমপ্লিট সার্ভার ভাড়া করা সবচেয়ে কমন বিষয়। এখন আমরা এখানে হোস্টিং টাইপ নির্বাচন ও আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
হোস্টিং প্লাটফর্মঃ
সচরাচর ব্যবহৃত এই দুটি অপশনের যে কোনটি আপনি আপনার সাইটের জন্য বেঁছে নিতে পারেন,
• উইন্ডোজ হোস্টিং সার্ভিস উইন্ডোজের বিভিন্ন ফ্লেভারে চালিত হোস্টিং সার্ভিস, Windows hosting লাইসেন্স ও অন্যান্য কারণে কিছুটা ব্যয়বহুল।
• লিনাক্স হোস্টিং সার্ভিস লিনাক্স হোস্টিং সার্ভিসের খরচ উইন্ডোজ থেকে কিছুটা কম পড়বে, আর অন্যান্য সুবিধাও কিছুটা বেশি। অনেক আইএসপি আছে যারা ইউনিক্সের বিভিন্ন হোস্টিং সার্ভারের সুবিধা দিয়ে থাকে।
হোস্টিং টাইপঃ এক্ষেত্রে অনেকগুলো অপশন আছে, আপনি আপনার রিকয়ারমেন্ট ও বাজেটের উপর ভিত্তি করে যেকোনো ধরনের হোস্টিং টাইপ নির্বাচন করতে পারেন। প্রধান প্রধান অপশনগুলো নিয়ে আলোচনা করা হল।
ফ্রি হোস্টিংঃ
নিজেদের বিজ্ঞাপন চালুর শর্তে অনেক সার্ভিস প্রভাইডার ফ্রিতে ওয়েব স্পেস দিবে আপনাকে হোস্টিংএর জন্য। geocities.com, lycos.com, myspace.com এরা এরকম সাইট।

শেয়ারড হোস্টিংঃ শেয়ারড হোস্টিংএ আপনার সাইট অন্য অনেক সাইটের সাথে কোনও শক্তিশালী সার্ভারে হোস্টেড হবে। আপনার নিজস্ব ইউজার আইডি থাকবে, পাসওয়ার্ড থাকবে শেয়ারড হোস্টিংএ লগইন করার জন্য, আর নিজের ওয়ার্ক এরিয়াতে আপনি কাজ করতে পারবেন। অন্যান্য হোস্ট পার্টনারদের কোনও কিছু আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না। ছোটখাট সাইটের জন্য এধরণের হোস্টিং খুবই উপযোগী যেখানে আপনার সাইটের স্থান বা গতি খুব গুরুত্বপূর্ণ না। একটি সাইটের ট্র্যাফিক অন্য সব হোস্টেড সাইটের গতির উপর প্রভাব ফেলে এখানে।

ভার্চুয়াল ডেডিকেটেড হোস্টিংঃ
মধ্যম ধরনের ব্যবসার জন্য এই ধরনের হোস্টিং খুব উপযোগী। এই সিস্টেমে আমরা আমাদের সাইটের জন্য ডেডিকেটেড ব্যান্ডউইথ আর ডেডিকেটেড RAM পাব। ওয়েব সার্ভার মেইনটেনের জন্য রুট আইডি আর পাসওয়ার্ড থাকবে। আপনার ভার্চুয়াল ডেডিকেটেড সার্ভারের একক মালিক হবেন আপনি, যে কোনও সফটওয়ার ইন্সটল বা বাদ দেয়ার ক্ষমতাও আপনার থাকবে। এধরণের হোস্টিং সিঙ্গেল সার্ভারের উপর স্থাপিত হয়, এটি এমন ভাবে চালিত হয় যেন প্রত্যেক ইউজারের নিজস্ব ডেডিকেটেড ব্যান্ডউইথ আর স্পীড থাকে। একটু ব্যয়বহুল হলেও মাঝারি ব্যবসার জন্য এধরণের হোস্টিং খুবই উপযোগী।

ডেডিকেটেড হোস্টিংঃ
এই সিস্টেম ভার্চুয়াল ডেডিকেটেড হোস্টিংএর মতই কিন্তু সম্পূর্ণ মেশিন আপনার জন্য বরাদ্ধ থাকবে, বিধায় খরচও অনেক বেশি ভার্চুয়াল ডেডিকেটেড হোস্টিং থেকে । তাই খুব বেশি ট্র্যাফিকের সম্ভবনার সাথে এটি সংশ্লিষ্ট হতে পারে।
কোলোকেটেড হোস্টিংঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডেডিকেটেড রিসোর্স সেট করা অনেক কঠিন হতে পারে, আগুন বা নাশকতার বিরুদ্ধে নিরাপত্তার প্রশ্নে, ব্যাকআপ পাওয়ার, ডেডিকেটেড ইন্টারনেট সংযোগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে। কোলোকেশন এখানে একটি অপশন যেখানে আপনি আপনার মেশিন সার্ভিস প্রভাইডারের আওতায় রাখতে পারেন এসব সুবিধা পাওয়ার জন্য। এটিও অনেক ব্যয়বহুল তাই খুব বেশি ট্র্যাফিকের সম্ভবনার সাথে এটি সংশ্লিষ্ট ।

হোস্টিং কম্পোনেন্টঃ
ওয়েব সার্ভার স্পেস কেনার সময় নিচের বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, কারণ এগুলোর উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সার্ভিস প্রভাইডারের ক্ষেত্রে খরচের তারতম্য হতে পারে।
ডিস্ক স্পেসঃ
ছোট বা মাঝারি সাইটের জন্য ১০থেকে ১০০ মেগাবাইট মত ডিস্ক স্পেস দরকার হতে পারে। আপনি যদি প্রচুর অডিও বা ভিডিও ফাইল সাইটে রাখতে চান তাহলে আরও বেশি জায়গা লাগবে। আর ভবিষ্যতে প্রয়োজনে আরও ডিস্ক স্পেস নেয়া যাবে কিনা তা মাথায় রাখুন।
মাসিক ট্র্যাফিক
ছোট বা মাঝারি সাইটের জন্য ১ থেকে ১০ গিগাবাইট ডাটা ট্রান্সফারের সুবিধা থাকতে হবে। অডিও বা ভিডিও ফাইল সাইটে রাখতে এই পরিমানের বেশি ক্যাপাসিটি দরকার হবে। নির্দিষ্ট সীমার বেশি ট্র্যাফিকের ক্ষেত্রে কি হবে তাও জেনে রাখুন আগে থেকেই।
প্রসেসিংএর গতিঃ
শেয়ারড মেশিনে স্পেস কিনলে আপনার প্রসেসিংএর গতি সম্পর্কে কিছু করার নেই, একই সার্ভিস প্রভাইডারের অধীনে অন্যদের অবস্থা দেখে হয়ত কিছুটা অনুমান করতে পারবেন। ভার্চুয়াল ডেডিকেটেড হোস্টিং বা ডেডিকেটেড হোস্টিং হলে আপনাকে কতটা RAM দেয়া হয়েছে তা থেকে কিছুটা জানা যেতে পারে। আপনি কেমন খরচ করছেন তার উপর নির্ভর করবে আপনি কেমন প্রসেসিং ক্ষমতা পাচ্ছেন, সেটি।
কানেকশনের স্পীডঃ
আজকাল সব সার্ভিস প্রভাইডারের স্পীডই অনেক ভাল, দেখেশুনে বিটস পার সেকেন্ড একক হিসেবে ভাল সার্ভিস প্রভাইডারের কাছ থেকে কানেকশন নিয়ে নিন। ৬৪ কিলোবাইট পার সেকেন্ড থেকে ২.৪৮৮ গিগা স্পীডের পর্যন্ত গতির কানেকশন আছে।
ইমেইল একাউন্টঃ
পর্যাপ্ত ইমেইল একাউন্ট ঠিক করে রাখুন। অনেক কাজে লাগতে পারে।যেমন IMAP, POP আর ইমেইল ফরোয়ার্ডিং অপশন ইত্যাদিও পেতে পারেন ইমেইল ফ্যাসিলিটির সঙ্গে।
ইমেইলিং সাপোর্টঃ
ইমেইল একাউন্ট থাকার পাশাপাশি আপনার সার্ভারের ব্যাকএন্ড থেকে ইমেইল পাঠানোর সক্ষমতা থাকতে হবে, যদি গ্রাহক আপনার সাথে ফর্মের মাধ্যমে যোগাযোগের জন্য চেষ্টা করে তাহলে আপনার ইমেইল সার্ভিসের সেই ব্যবস্থা থাকতে হবে যেন সেটি মেইলটিকে আপনার অভীষ্ট ইমেইলে প্রেরণ করে দেয়। সহজ করে বলতে গেলে, এসএমটিপি সার্ভার যেন আপনার সার্ভারে সেটআপ করা আর চালু অবস্থায় থাকে।
আধুনিক প্রযুক্তিঃ
আপনার সার্ভারে আধুনিক সব প্রযুক্তি চালু আছে এটি নিশ্চিত করবেন, পিএইচপি, পার্ল, এএসপি, জাভার সর্বশেষ সংস্করণ যাতে সমর্থিত থাকে সেদিকে দৃষ্টি দেবেন।
ডাটাবেসঃ
অনেকগুলো ডাটাবেস আছে, মাইএসকিউএল, ওরাকল, এসকিউএল সার্ভার ইত্যাদি।আপনার ডাটাবেস রিকয়ারমেন্টের উপর ভিত্তি করে আপনাকে এদের থেকে বাছাই করতে হবে। শেয়ারড সার্ভারে আপনার সাইট থাকলে জানতে হবে কতটা জায়গা আপনি পাচ্ছেন ডাটাবেসের জন্য। অনেক সার্ভিস প্রভাইডারই খুব বেশি জায়গা দেয় না ডাটাবেসের জন্য। ডাটাবেসের জন্য বেশি জায়গা যদি আপনার প্রয়োজন হয়ে থাকে তাহলে ভার্চুয়াল ডেডিকেটেড হোস্টিং আপনার জন্য উপযোগী হতে পারে।
সার্ভার আপটাইমঃ
স্বনামধন্য ও নির্ভরযোগ্য সার্ভিস প্রভাইডারের কাছ থেকে সার্ভার নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। যারা ৯৯.৯৯ শতাংশ আপটাইম আপনাকে দিতে পারবেন, তাদের কাছেই যাওয়া উচিৎ। অনেক সার্ভিস প্রভাইডার আছেন যারা আপনাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরও আপনার সার্ভার ডাউন থাকার পর।
ব্যাকআপ ও এফটিপিঃ
এটি নিশ্চিত হওন যেন আপনার সার্ভিস প্রভাইডার আপনাকে ব্যাকআপ রাখার যথেষ্ট সুযোগ দিচ্ছে। বিশেষ করে যখন আপনার সাইট ঘনঘন পরিবর্তিত হয়। অনেক সার্ভিস প্রভাইডার অল্প খরচের বিনিময়ে এক্ষেত্রে বাড়তি সেবা দিয়ে থাকে।
কন্ট্রোল প্যানেলঃ
আপনার হোস্টিং একাউন্ট মেইনটেইনের জন্য কি ধরনের সুবিধা পাচ্ছেন তা নিশ্চিত হওন। আপনার সার্ভিস প্রভাইডার আপনাকে সহজে ব্যবহারযোগ্য কন্ট্রোল প্যানেল সুবিধা দিচ্ছে কিনা তা জানুন। কন্ট্রোল প্যানেলের মাধ্যমে কিছু বেসিক অপারেশন আপনি সহজে পরিচালনা করতে পারবেন, যেমন সার্ভিস রিকোয়েস্টের লগইন, রিবুট রিকোয়েস্ট, আর এমন আরও কিছু বিষয়।
কাস্টমার সাপোর্টঃ
আপনার সার্ভিস প্রভাইডারের সাথে ডিল করার আগে জেনে নিন তারা আপনাকে সব সুবিধা দেবে কিনা। আপনার পরিচিত জনদের কাছ থেকে ভাল সার্ভিস প্রভাইডারের খোঁজ পেতে পারেন। অনেক সার্ভিস প্রভাইডার আপনাকে চব্বিশ ঘণ্টা টেকনিক্যাল ও নন টেকনিক্যাল বিভিন্ন বিষয়ে সমাধান দিতে প্রস্তুত আছেন।
ওয়েবঃ ই-কমার্স হোস্টিং
যদি আপনার সাইটে কোনও ধরনের ট্রানজেকশন অর্থাৎ বেচাকেনা হয় কোনও পণ্য বা সেবার, তাহলে আপনার সাইটটি ই-কমার্স সাইট বলে ধরা যাবে। আমরা এখন এবিষয়ে আলোচনা করব, ই-কমার্স সাইট সম্পর্কে সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়ত এখানেও সম্ভব হবে না, তবে মৌলিক কিছু বিষয়ে আলোকপাত করা হবে যার থেকে আপনি আপনার কিছু দিকনির্দেশনা পেয়ে যাবেন।
ই-কমার্স সাইট হোস্টিং একটু ব্যয়বহুল। তবে এতো বেশি নয় যে আপনি শুরুই করতে পারবেন না। আজকাল ই-কমার্স সাইট সেটআপ করা খুবই সহজ। মূল বিষয় হল ভাল সার্ভিস প্রভাইডার খুঁজে পাওয়া আর সঠিক তথ্য একসাথে করা।
অনেক সার্ভিস প্রভাইডার আছে যারা আপনার ভার্চুয়াল স্টোর রেডি করে দেবে, খুব কম খরচে। এছাড়াও গুগল তাদের একাউন্ট সার্ভিস চালু করেছে যেখানে আপনি আপনার পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন। তবে, ই-কমার্স সাইট সেটআপ করার সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে সেগুলো হল,
• কাস্টমার রেজিস্ট্রেশন
• কাস্টমার ট্রানজেকশন
• প্রোডাক্ট ক্যাটালগ
• কাস্টমার অর্ডার
• অর্ডার সিকিউরিটি
• সার্ভার সিকিউরিটি
• সার্ভার ব্যবস্থাপনা
• সার্ভার ডাউনটাইম
• ইনভেন্টরি কন্ট্রোল
• শিপমেন্ট মেথড
• পেমেন্ট মেথড
• ফরেন কারেন্সি
• ক্রেডিট কার্ড
• ট্যাক্স ইস্যু
আপনার সার্ভিস প্রভাইডারের সাথে এবিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা উচিৎ, কীভাবে তিনি এবিষয়গুলো সম্পর্কে আপনাকে সাহায্য করবেন।
ওয়েব- সাইট ব্যাকআপ
ধরুন, আপনার সার্ভারের হার্ডডিস্ক ক্রাশ করল। অথবা আপনার সাইট হ্যাক করা হল, হ্যাকার সব ফাইল ডিলিট করে দিল। আপনার ওয়েব হোস্ট আপনার সব টাকা আর ডাটা নিয়ে উধাও হয়ে গেল। অথবা, ভুমিকম্পে আপনার সার্ভিস প্রভাইডারের ভবন ধ্বসে গেলো, সব কিছু ধ্বংস হল।
সত্যি বলছি, এমন কখনো হয় না। তারপরও যদি আপনি এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত না থাকতে পারেন, তাহলে হয়ত কখনো আপনার সব কষ্ট বৃথা যেতে পারে। আপনার ডাটার ব্যাকআপের কথা আমরা এজন্যই বলছি।
এখন, কিছু প্রশ্ন উঠতে পারে, Now there are many questions −
• কত সময় পরপর ব্যাকআপ নেব
• ব্যাকআপ কোথায় সংরক্ষিত হবে
• কি ধরনের ব্যাকআপ নেয়া হবে
• ব্যাকআপ নেবে কে
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর একএক করে দেয়া হল নিচে,
কত সময় পরপর ব্যাকআপ নেবঃ যদি আপনার সাইট অনেকদিন পরপর চেঞ্জ হয় তবে একবার ব্যাকআপ নিলেই যথেষ্ট। প্রয়োজনে আবার রিস্টোর করে কাজ করছে কিনা দেখে নিলেই হবে। আর যদি নিয়মিত সাইট আপডেট করা হয় তবে রেগুলার ব্যাকআপ নিতে হবে। আমাজন টাইপের সাইটে ব্যাকআপের জন্য খুব কঠিন শিডিউল আর স্ট্রাকচার ফলো করা হয়। এগুলো খরচসাপেক্ষও বটে।
এটা আসলে আপনার ব্যবসার ধরনের উপর নির্ভর করে, যদি আপনি একদিনের ডাটাও হারালে কঠিন সমস্যায় পরেন তাহলে আপনাকে দৈনিকই আপডেট করতে হবে ব্যাকআপ, আর যদি সপ্তাহে বা মাসে ব্যাকআপ নিলেও চলে, তাহলে তাও করতে পারেন।
ব্যাকআপ কোথায় সংরক্ষণ করবেন?
সাধারণত এক মেশিন থেকে অন্য মেশিনে ডাটা সরিয়ে রাখা হয় ব্যাকআপ এর জন্য। সম্ভব হলে ব্যাকআপ সার্ভার ব্যবহার করে এফটিপি ব্যবহার করে সেখানে ডাটা সরিয়ে রাখতে পারেন। অল্প ডাটা হলে সিডি বা ডিভিডিতে ব্যাকআপ সংরক্ষণ করতে পারেন। একাধিক ব্যাকআপ ব্যবস্থা রাখতে পারেন। অনেক সার্ভিস প্রভাইডার আছে যারা অল্প খরচে ব্যাকআপ সার্ভার ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয়।
কি ধরনের ব্যাকআপ নেবঃ
দুই ধরনের ব্যাকআপ আছে, ইনক্রিমেন্টাল আর ফুল ব্যাকআপ। সঞ্চিত তথ্যের মধ্যে তুলনা করে আপডেট করা ব্যাকআপ করা হয় ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপে আর ফুল ব্যাকআপ সম্পূর্ণ তথ্য সংরক্ষণের কাজ করে।
কে নেবে ব্যাকআপ?
সীমিত ডাটার ক্ষেত্রে সাইটের সব ফাইল কপি করে নিয়ে নিলেই চলে, কিন্তু বিশাল ডাটাবেস বা অসংখ্য ফাইলের ক্ষেত্রে দৈনিক বা সাপ্তাহিক আপডেট করা অসম্ভব মনে হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাকে অটোমেটেড স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করতে হবে। সেল স্ক্রিপ্ট বা পার্ল স্ক্রিপ্ট দ্বারা বিভিন্ন ডিরেক্টরি থেকে ফাইল নিয়ে জিপ করে স্বতন্ত্র ব্যাকআপ নাম্বার দিয়ে এফটিপি করে নির্ধারিত অভীষ্ট লক্ষ্যে প্রেরণ করতে হবে।
শেষ কথাঃ
আপনি আপনার ব্যাকআপ কীভাবে রাখবেন তা আপনার উপরই নির্ভর করে। সঠিকভাবে নিয়মিত ব্যাকআপ আপনাকে নিতেই হবে, নাহলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হতেই পারে।
It is up to you to decide how you want to take your backup. If you are a website owner, then you must take regular backup without failure. Else, it might lead to serious consequences.
ওয়েবঃ সাইট পরিসংখ্যান
আপনার সাইট একবার চালু হয়ে গেলে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনার ভিজিটররা কেমন আসছে, তারা কি করছে বা চাইছে ইত্যাদি। নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনার বিস্তারিত জানা থাকতে হবে,
• আপনার ভিজিটর কে −ভিজিটরের অবস্থান আর পরিচয় সম্পর্কে জানা থাকতে হবে, আইপি এড্রেস নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে।
• ভিজিটরের টাইম স্টেম্প− সার্ভার ডাউনের প্রস্তুতি হিসেবে বেশি ভিজিটর আসার সময় জানা থাকা, আর কোনও ভিজিটরের সম্পর্কে তদন্ত হলে তার ভিজিটের সময় আর আইপি সম্পর্কে জানা থাকা।
• ভিজিটররা কী প্রেফার করছে −এটি থেকে আপনি ধারণা করতে পারেন কিসে আপনার বেশি গুরুত্ব দেয়া দরকার আপনার সাইটে।
• ভিজিটররা কীভাবে আসছে−জানা থাকতে হবে ভিজিটরের আগমনের হেতু, সরাসরি নাকি অন্য সাইট বা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে।
• কতক্ষন তারা সাইটে থাকছে −এটি ঠিক করে আপনার সাইটের উপযোগিতা। যদি কম সময় পরে তারা সাইট ছেড়ে চলে যায়, তবে আপনাকে উদ্ভাবনী উপায় খুঁজতে হবে তাদের সাইটে রাখার জন্য।
• ভিজিটরের ব্রাউজারঃ − আপনার সাইট ইমপ্রুভ করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ , এদিকেও আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে।
সাইট পরিসংখ্যান প্রোগ্রাম
অনেক সাইট আছে যার উপরের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে।
• আপনি Googles Analytics ব্যবহার করে আপনার সাইট পরিসংখ্যান জানতে পারেন,
• এটি Webalizer. ব্যবহার করেও বেসিক সাইট পরিসংখ্যান জানতে পারেন
• আপনার সাইটের সাইট পরিসংখ্যান জানতে পারেন AWStats.এখান থেকেও।
সাইট পরিসংখ্যান টারমিনোলজিঃ
সাইট পরিসংখ্যানের সাথে সম্পৃক্ত কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন,

• ইউনিক ভিজিটর- নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ইউনিক ভিজিটরের সংখ্যা
• মোট ভিজিট − নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মোট ভিজিটের সংখ্যা
• পেজ ভিউ বা ইমপ্রেসন − প্রতিবার একটি সাইটের পেজ লোড হলে তা পেজ ভিউ বলে গণ্য হবে।
• হিটস- এটি পেজ ভিউয়ের মতই, আপনার সাইটের কোনও লিঙ্কে ক্লিক করার সাথে সম্পর্কিত।
• ডিরেক্ট এক্সেসঃ ব্রাউজারে লিখে বা সরাসরি আপনার সাইটে প্রবেশ করেছে এমন ভিজিটরের হিসাবে এটি পরিমাপ করা হয়।
• রেফারার আর রেফারেল ইউআরএল − অন্য কোনও সাইট এড্রেস যেখান থেকে আপনার সাইটে আসার নির্দেশনা লিঙ্ক আছে, এমন বিষয় এতে সংশ্লিষ্ট। .
ওয়েব- সাইটের জনপ্রিয়তাঃ
আপনি একটি সাইট ডিজাইন করেছেন, ডেভলাপ করেছেন, হোস্টেডও করেছেন। এখন চিন্তা করার সময় এসেছে কতজন ভিজিটর আপনার এড্রেস আর সেবা সম্পর্কে জানে।
মূলত সাইট হোস্টিংএর পরেই আসল কাজ শুরু হয়। সাইটের জনপ্রিয়তা পেতে কিছু কাজ করতে হয়, স্বল্প পরিসরে সবকিছু হয়ত বর্ণনা করা কঠিন, কিন্তু এবিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল নিচে।
সার্চ ইঞ্জিন সম্পৃক্ত করাঃ গুগল, ইয়াহু আর এমএসএন জাতীয় সার্চ ইঞ্জিনে আপনার সাইট পরিচিত করান, অটোমেটেড সফটওয়ার ব্যবহার করবেন না।
ওপেন ডিরেক্টরি যোগ করুনঃ dmoz.com আর yahoo.com জাতীয় ওপেন ডিরেক্টরি যোগ করুন, আপনার সাইটের জনপ্রিয়তা পাওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যাবে।
গুগল এড ওয়ার্ড - গুগলের পরিষেবা, এরসাথেও সংযুক্ত হতে পারেন সাইটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে।
এছাড়াও এডভারটাইজিং প্রোগ্রাম, হোয়াইট পেপার ও আর্টিকেল, সাইট লিঙ্ক এক্সচেঞ্জ ইত্যাদিও সাইটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করে।
ওয়েবঃ ফ্রি গ্রাফিক্সঃ
যেকোনো সাইটের জনপ্রিয়তার জন্য সুন্দর গ্রাফিক্স ভাল অবদান রাখতে পারে। আপনি ওয়েব থেকে ফ্রি গ্রাফিক্স নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন আপনার সাইটের জন্য। অনেকে নিজে গ্রাফিক্স তৈরি করে নেয়, তবে আপনি নিজেও ওয়েব থেকে ফ্রি গ্রাফিক্স পেতে পারেন ইচ্ছেমত। ফ্রি গ্রাফিক্স সম্পর্কে জানতে দেখতে পারেন এখানে, Free Web Graphics. ।

Permanent link to this article: http://bangla.sitestree.com/%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a7%87%e0%a6%ac%e0%a6%83-%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%87%e0%a6%95-%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%a1-%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a7%9f-%e0%a6%aa/

Leave a Reply